হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) অসীম আধ্যাত্মিক উচ্চতা ও আসমানী চরিত্রের অধিকারী হয়েও সর্বোচ্চ ক্ষমতার মুহূর্তে চরম বিনয় ও নম্রতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাসীদের মাঝে দয়া ও নম্রতার ডানা মেলে চলাফেরা করতেন। নবী (সা.)-এর সৌন্দর্য এতই মহান ছিল যে, আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি ছিল তাঁর নূর।
তিনি বলেন, “আমাদের উচিত চিন্তা ও মনোযোগকে নবী করিমের (সা.) মহান ব্যক্তিত্ব ও গুণাবলির দিকে কেন্দ্রীভূত করা। শিয়া মুসলমানরা কেন এত ভালোবাসা ও আত্মোৎসর্গ নিয়ে আলী ইবনে আবু তালিব (আ.)-কে স্মরণ করেন? কারণ, আলীর (আ.) নাম উচ্চারণ নিজেই ইবাদত। আমাদের এতবার ‘আলী, আলী’ বলতে হবে, যতক্ষণ না তিনি আমাদের হাত ধরে নবী করিমের (সা.) মহিমা দেখার যোগ্য করে তোলেন। সূর্যের দিকে সরাসরি তাকানো যায় না, কিন্তু চাঁদ (ইমাম আলী) সেই সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে আমাদের দেখাতে পারেন।”
তিনি আহলে বাইতের (আ.) ত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এত মহিমা যে, হযরত ফাতিমা (সা.আ.) বিনা দ্বিধায় তাঁর জন্য আত্মোৎসর্গ করেছিলেন। অন্যান্য ইমামরাও একইভাবে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তখনই মানুষ নবীর (সা.) মহিমা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে শুরু করে এবং বড় বড় প্রশ্নের মুখোমুখি হয়।”
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহিয়ান রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মদিনকে মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ আখ্যা দিয়ে বলেন, “একবার এই উপলক্ষে আমি আয়াতুল্লাহ বেহজাতের খিদমতে ছিলাম। তিনি আবেগময় কণ্ঠে বলছিলেন: ‘মানবজাতির জন্য এই দিনের চেয়ে বড় দিন আর কী হতে পারে? এই দিনের চেয়ে বড় ঈদ আর কী হতে পারে?’ তখনই আমি বুঝলাম এমন অনেক রহস্য রয়েছে যা আমরা জানি না। নবী করিমের (সা.) মহিমা আমাদের দৃষ্টির ও ভাষার সীমার বাইরে।”
তিনি ইমাম আলী (আ.)-এর নবীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “কাবার ভেতরে জন্ম নেওয়া, ওহির সাক্ষী, প্রথম কোরআন ব্যাখ্যাদাতা, নবীর উত্তরসূরি, জান্নাত-জাহান্নামের ভাগকারী এবং কিয়ামতের দিনের শাসক হয়েও যখন ফাতিমা (সা. আ.)-এর সাথে বিয়ের প্রসঙ্গ এলো, ইমাম আলী (আ.) বলেছিলেন: ‘আমি কোথায় আর রাসূলুল্লাহর কন্যা কোথায়! আমি তো সাহস করি না তাঁর কাছে প্রস্তাব দেওয়ার।’”
তিনি শেষে বলেন, “যদি এটাই আলীর (আ.) নবীর প্রতি সম্মান হয়, তাহলে আমাদের জন্য কত বড় সৌভাগ্য যে আমাদের নবী ও তাঁর পরিবারকে দরূদ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটি আল্লাহর বিশেষ রহমত। আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.) বলতেন: ‘একবার আন্তরিকভাবে দরূদ পাঠালে মানুষের অতীত ও ভবিষ্যতের সব গুনাহ ক্ষমা হতে পারে।’”
আপনার কমেন্ট